দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, বিদেশ যেতে মরিয়া তরুণেরা

বৈদেশিক কর্মসংস্থান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে কর্মসংস্থান শুধুমাত্র দেশের বেকারত্ব হ্রাসই করে না, একই সাথে বিদেশে কর্মরত প্রবাসীদের প্রেরণকৃত রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও কর্মী প্রেরণ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশসমূহের সাথে সমঝোতা সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে বাংলাদেশি কর্মী গমন শুরু হয়।  বৈদেশিক কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে। উদ্দেশ্য হলো প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণ। রেমিটেন্সের প্রবাহ বৃদ্ধি এবং দেশের সকল অঞ্চল হতে কর্মীদের বিদেশে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে সকল অভিবাসী কর্মীর কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে চলেছে। 

 

দেশে পছন্দমতো কাজ না পাওয়ায় তরুণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তাঁরা কাজের সন্ধানে কিংবা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে কাজের প্রত্যাশায় গড়ে প্রতি ঘণ্টায় দেড় শ বাংলাদেশি দেশ ছাড়ছেন। প্রতিবছর বাংলাদেশিদের জন্য দেশে-বিদেশে যত নতুন কর্মসংস্থান হয়, তার এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে প্রবাসে। স্বল্প শিক্ষিত তরুণদের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।

দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে না পেরে বিদেশে কাজের জন্য যাওয়ার প্রবণতা তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেশ বেড়েছে। দুই বছর ধরে প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি নারী-পুরুষ বিভিন্ন দেশে গেছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে বিদেশে গেছেন রেকর্ড পরিমাণ—১৩ লাখের বেশি কর্মী। সেই হিসাবে, গত বছর প্রতি ঘণ্টায় গড়ে দেড় শ কর্মী বিদেশে গেছেন। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে যান ১১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি কর্মী। ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) ৩ লাখ ২২ হাজার ২০৭ জন কাজের জন্য বিদেশে গেছেন।

 

 

পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মেডিক্যাল ফিট সার্টিফিকেট ও সিকিউরিটি মানি জমা দেয়ার এক মাসের মধ্যে ভিসা মিলবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রতারণার ঘটনা ঘটলে বিএমইটির সহযোগিতা পাওয়া যাবে। সেজন্য ব্যাংক রশিদসহ উপযুক্ত প্রমাণ রেখে সব ধরনের লেনদেন করতে হবে।

 

Our Services

ফ্যাক্টরী ওয়ার্কার

ক্লিনার ওয়ার্কার

কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার

রেস্টুরেন্ট ওয়ার্কার

ড্রাইভার (হেভি/লাইট)

এগ্রিকালচার ওয়ার্কার

হোটেল বয়

মেডিকেল ওয়ার্কার

বদলে নিন নিজেকে, পাল্টে দিন ভবিষ্যত

Our Destination

সৌদি আরব

সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এই দেশের অর্থনীতি মূলত তেল রপ্তানির উপর নির্ভর করে থাকে। মুসলমানদের কাছে এটি পবিত্র একটি দেশ। এই দেশের কাজের বেতন বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। ২০৩০ সালে ওয়ার্ল্ড এক্সপো এবং ২০৩৪ সালে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হইয়েছে সৌদি আরব। এ কারণে কন্সট্রাকসন, ক্লিনিং, মেনটেইনেন্স, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি সেক্টরে দক্ষ কর্মীদের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

দুবাই

অনেকে দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চায়। দুবাই আসলে কোন দেশ নয়। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঝলমলে বিখ্যাত একটি শহর। দুবাইয়ের অর্থনীতি মূলত তেল ও পর্যটন নির্ভর। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অসংখ্য বাঙালি প্রবাসী বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছে। কাজের বেতন তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। দুবাই কাজের বেতন কাজের ধরন, দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। দুবাই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ পাবেন। বর্তমান দুবাই প্রবাসীদের কাজের বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। নতুন অবস্থায় প্রবাসীদের কাজের বেতন কম হয়ে থাকে। তবে কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়লে বেতন বৃদ্ধি পায়।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়া এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশ। এই দেশে বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিকদের কাজের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। কাজের ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী কাজের বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে।মালয়েশিয়া কাজের ধরন, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ব্যক্তি ভেদে বেতন ভিন্ন হয়ে থাকে, মালয়েশিয়া উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার কারণে বিভিন্ন সেক্টরে বিভিন্ন ধরনের কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে। মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক কাজের সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো নির্ধারিত রয়েছে। বর্তমান মালয়েশিয়া সর্বনিম্ন বেতন প্রায় ১,৭০০ রিঙ্গিত। বর্তমান মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন শ্রমিক, কারখানা শ্রমিক, পাম বাগান, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বিং, পেইন্টার, সুপার মার্কেট ইত্যাদি কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে।

কুয়েত

বাংলাদেশের অনেক মানুষ কুয়েতের বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছে। অনেক বাংলাদেশ থেকে এই দেশে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহী। কুয়েত ধনী একটি রাষ্ট্র যেটির অর্থনীতি মূলত তেল ও গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। ধনী এই দেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। বর্তমান কুয়েতে কনস্ট্রাকশন শ্রমিক, ড্রাইভিং, ইলেকট্রিশিয়ান, ক্লিনার, ওয়েল্ডিং শ্রমিক, পেইন্টার, ফ্যাক্টরি শ্রমিক, প্লাম্বার, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মী, মেকানিক ইত্যাদি কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে। বর্তমান কুয়েত কাজের বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা থাকে ১ লাখ টাকা হয়ে থাকে। তবে কিছু কাজ রয়েছে যেগুলো করলে কাজের বেতন ২ লাখ টাকার বেশি হয়ে থাকে।

কাতার

কাতার পশ্চিম এশিয়ার একটি সমৃদ্ধ দেশ। এটির অর্থনীতি প্রধানত প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেলের উপর নির্ভরশীল। কাতার বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত এবং এখানে কাজের সুযোগের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রমিকদের একটি বৃহৎ অংশ কাজ করছে। কাতারে প্রতিনিয়ত শ্রমিক, মেকানিক, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার, হোটেল কর্মী এবং খাদ্য ও পানীয় শিল্পে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কাতারে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক রয়েছে। যদিও কাতারে একজন কর্মীর সর্বনিম্ন বেতন প্রায় ১,০০০ রিয়াল। এটি বেসিক বেতন যা সাধারণত অদক্ষ বা কম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মীদের দেওয়া হয়। বাংলাদেশি প্রবাসীরা কাতারে নানা ধরনের কাজের মাধ্যমে সাধারণত মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এই আয় ব্যক্তির কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এবং কাজের সময়ের ওপর নির্ভর করে থাকে।

ইউরোপ

বাংলাদেশ থেকে উন্নত জীবন ও ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চায়। ইউরোপ পৃথিবীর অন্যতম একটি সমৃদ্ধ মহাদেশ। ইউরোপের কাজের বেতন এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সেক্টরে বিদেশি কর্মীদের চাহিদা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা চাইলে পড়াশোনার পাশাপাশি খন্ডকালীন কাজ করতে পারে। ইউরোপে কনস্ট্রাকশন শ্রমিক, প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান, পেইন্টার, ড্রাইভিং, পোশাক শ্রমিক, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মী, ক্লিনার, ফ্যাক্টরি শ্রমিক, ফুড ডেলিভারি সার্ভিস, রাইড শেয়ারিং, কৃষি শ্রমিক, মেকানিক, এসি ও রেফ্রিজারেটর টেকনিশিয়ান ইত্যাদি কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে।

কেন আমাদের উপর আস্থা রাখবেন?